“এ এক অসাধারণ এবং বিস্ময়কর অনুভূতি”- এশিয়ান কাপ অভিষেক নিয়ে আবেগপ্রবণ দীপক টাংরি

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ দিনটা ১৩ ই জানুয়ারি। কাতারের স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় পতাকায় ছেয়ে গেছে মাঠের প্রায় অনেক দর্শক আসন।কাতার দেশটি মনোরম হলেও আবহাওয়া আকস্মিকভাবে ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে। তারই মধ্যে খেলোয়াড়দের নাম ঘোষণা করার সময় হঠাৎ নিজের ভারতীয় ডিফেন্ডার দীপক টাংরির শরীরের মধ্যে যেন এক হিমেল হাওয়া খেলে গেল। নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার স্বাদ পাওয়া হয়তো একেই বলে। তার ওপর অস্ট্রেলিয়ার মতো কঠিন প্রতিপক্ষর সাথে মোকাবিলা করাও।
দীপক জানিয়েছেন, “ এ এক অসাধারণ এবং বিস্ময়কর অনুভূতি। এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল যেন নিজের দেশেই খেলছি। মাঠের মধ্যে শুধুই যেন ভারতীয় পতাকা।”
আরও পড়ুন- ভিনি তাণ্ডবে চূর্ণবিচূর্ণ বার্সেলোনা, ১৩ তম স্প্যানিশ সুপার কাপ রিয়ালের
চূড়ান্ত দলে এই প্রথমবার জায়গা করে নিয়েছেন দীপক। এর আগে প্রস্তুতিমূলক খেলাগুলিতে কয়েকবার ডাক পেলেও এই ধরনের উচ্চস্তরের টুর্নামেন্টে প্রথম খেলছেন তিনি। দীপক এও জানিয়েছেন, “দলে যায়গা করে নেওয়ার জন্য আমাকে ক্লাবের হয়ে ভালোভাবে খেলতে হয়েছে। আমার লক্ষ্য ছিল শুধু প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং নিজের সেরাটা দিয়ে খেলা। আমি ধাপে ধাপে উঠতে চেয়েছিলাম। আমি বিকল্প হিসেবে দলে থাকবো ভেবেছিলাম তবে প্রথম একাদশে থাকবো এ আমি ভাবতেও পারিনি। খেলার আগের দিন রাত্রে যখন আমাকে জানানো হয় যে আমাকে খেলতে হবে তখন আমি মাথা থেকে সমস্ত চিন্তা ঝেড়ে ফেলে সময়মতো আগে ঘুমিয়ে নিয়েছি।”
ভারত দুই গোলে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হলেও কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রশংসনীয় ফুটবল খেলেছে ভারত। সেই প্রশংসার পেছনে অনেকটাই অবদান দীপকের। তেরোটি পজেশন রিকভারি, ছয়টি ইন্টারসেপসন, সাতটি ডুয়েল এবং ৮২ শতাংশ পাসিং অ্যাকুউরেসি ছিল দীপকের।
আরও পড়ুন- কোচবিহার ট্রফি ফাইনালে রেকর্ড রানের নজির, নতুন বিস্ময় কর্নাটকের প্রখর চতুর্বেদী
“এই স্তরে খেলাটা আমাদের কাছে ছিল এক আলাদা অভিজ্ঞতা। নিজেদের খেলা ধরে রাখতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। তবে শেষ পর্যন্ত আর শেষ রক্ষা হয়নি। অস্বীকার করার জায়গা নেই ভুল আমাদের। আমাদের এখন উচিত মাথা নিচু করে পরের ম্যাচের জন্য নিজেদের তৈরি করা।” ,এমনটাই জানিয়েছেন দীপক।
দীপক প্রশংসনীয় ফুটবল খেললেও খেলা দেখেননি তার বাবা। পেশায় তিনি একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী এবং থাকেন পাঞ্জাবে। এ ব্যাপারে দীপক হেসে জানান , “আমার বাবা কখনই আমার খেলা দেখেন না। তিনি ভীষণ নার্ভাস হয়ে পড়েন। পরে মা বাবাকে জানান। তারা ভীষণ খুশি আমার এশিয়ান কাপ অভিষেকে।”
জুনিয়র স্তরে ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন দীপক। সুনীল ছেত্রী, সন্দেশ ঝিংগান, গুরপ্রীত সিং সান্ধু এবং অন্যান্যদের সাথে খেলার দরুন অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পেরেছেন তিনি যা বর্তমানে থেকে সাহায্য করে। এমনটাও জানিয়েছেন তিনি।
“ ছেত্রী ভাই আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয়।" অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর সাথে খেলার এমনটাই অভিজ্ঞতা জানালেন দীপক। তারকা ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিংগানের ব্যাপারেও তিনি বলেন “ সন্দেশ পাজি সোজা কথার মানুষ। আমরা কি ভুল করছি তাতে নিয়ে আমাদের দেখিয়ে দেন এবং ভুল সংশোধনের পথটাও তিনি দেখিয়ে দেন। আমি ভাগ্যবান দলের এরকম সিনিয়র পেয়ে।”
প্রশংসনীয় পারফরম্যান্সের জন্য ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের কাছে বহুল চর্চিত হচ্ছেন দীপক টাংরি।