এক যুগ অপেক্ষার অবসান, জ্বলল মশাল! ভারতসেরা ইস্টবেঙ্গল

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ ৬ বছর আগে সুপার কাপ ফাইনালে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে হার এখনও ভোলেননি লাল-হলুদ সমর্থকেরা। এরপর সময় পেরিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। তবে জাতীয় স্তরে ট্রফি জয় অধোরাই রয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। আই লিগ থেকে আইএসএলে আগমন। বছর বছর ব্যর্থতা। অবশেষে ইস্টবেঙ্গল দল খুঁজে পেল তাদের জাদুকরকে। নাম? কার্লেস কুয়াদ্রাত। ৬ মাসের মধ্যে দুইবার কাপ ফাইনালিস্ট। ডুরান্ড জয় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান। তবে এবার সামনে ছিল গত সুপার কাপের চ্যাম্পিয়ন ওড়িশা এফসি। এবং তাদের কোচ সেই সার্জিও লোবেরা যাকে মরশুম শুরুর আগে লাল-হলুদ জাদুকর ভাবছিলেন সমর্থকেরা। লোবেরার জাদুকে হার মানিয়ে প্রায় ১ যুগ পর জাতীয় স্তরে ট্রফি জয় ইস্টবেঙ্গলের। প্রথমার্ধে পিছিয়ে থেকেও ফিরে এল ইস্টবেঙ্গল। রূদ্ধশ্বাস ম্যাচের শেষ হাসি ইস্টবেঙ্গল দলের সৌজন্যে তাদের অধিনায়ক ক্লেইটন সিলভা। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে ম্যাচ ছিনিয়ে নেন ক্লেইটন। আগামী বছর এএফসি এসিএল ২ খেলবে ইস্টবেঙ্গল।
ম্যাচের প্রথম থেকেই সমানে-সমানে লড়াই হয় দুই দলের মধ্যে। কার্লেস কুয়াদ্রাত এবং সার্জিও লোবেরা দুজনেই একে অপরকে মেপে নেন প্রথম ১৫ মিনিটে। যদিও প্রথমার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ একটু হলেও বেশি ছিল ওড়িশার বিশেষত শুরুর দিকে রয় কৃষ্ণ এবং দিয়েগো মরিশিও গোলের কাছাকাছি পৌঁছে যান। তবে ম্যাচের আধ ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর সেট পিস থেকে গোলের কাছাকাছি পৌঁছে যায় লাল-হলুদ ব্রিগেড।
আরও পড়ুন- তরুণ জোসেফের বোলিং দাপটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের
তবে ম্যাচের ৩৯ মিনিটে গোল করে ওড়িশাকে এগিয়ে দেন দিয়েগো মরিশিও। ওড়িশার ফ্রিকিক বক্সের ভিতর রিসিভ করেন রয় কৃষ্ণ, তাঁর পা থেকে বল কাড়ার চেষ্টা করেন বোরহা কিন্তু এর মাঝে ঢুকে জোরালো শট মারেন দিয়েগো।
প্রথমার্ধের শেষে খেলার ফলাফল হয় ওড়িশা এফসি-১ ইস্টবেঙ্গল-০।
আরও পড়ুন- মরশুম শেষে বার্সেলোনা ছাড়ছেন কোচ জাভি
দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আগেই সিভেরিও এবং মন্দারের পরিবর্তে সদ্য এশিয়ান কাপ খেলে ফেরা নাওরেম মহেশ এবং লালচুংনুংগা নামান কুয়াদ্রাত।
আর এই পরিবর্তনেই খেলা ঘুরিয়ে দেন কুয়াদ্রাত। মহেশের বাড়ানো বল থেকেই গোল করেন নন্দকুমার।
৫৭ মিনিটে বক্সের ভিতর নন্দকুমারকে ট্যাকেল করেন ডেলগাডো, পেনাল্টির আবেদন করে ইস্টবেঙ্গল তবে নিশ্চিত পেনাল্টি দেন নি রেফারি।
৬০ মিনিটে আবারও বক্সের ভিতর ট্যাকেল করা হয় বোরহাকে। মোর্তাদা ফল ট্যাকেল করেন। এবার পেনাল্টি দেওয়া হয় ইস্টবেঙ্গলকে, যদিও এই পেনাল্টি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ৬২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন সল ক্রেসপো।
৬৯ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ফল। ১০ জন হয়ে যায় ওড়িশার দল। তবে লড়াই ছারেনি তারাও। ৮০ মিনিটে পোস্টে লাগে শট।
৮২ মিনিটে বোরহার বাড়ানো বল থেকে গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারতেন পরিবর্ত বিষ্ণু তবে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। বিষ্ণুকে তুলে সায়নকে নামিয়ে দেন কুয়াদ্রাত। তবে ম্যাচের একদম শেষ মিনিটে মরিশিওকে ট্যাকেল করে পেনাল্টি দিয়ে বসেন ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক প্রভশুখন গিল। ২-২ করেন আহমেদ জাহু। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়।
অতিরিক্ত সময়ের ৯৭ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারের শট পোস্টে লাগে, অন্যদিকে সৌভিক চক্রবর্তী লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।
তবে ইস্টবেঙ্গল দলের নায়ক সেই ক্লেইটন সিলভা। ১১১ মিনিটে ওড়িশা গোলরক্ষক তার রক্ষণভাগের ফুটবলারকে বল বাড়ালে ক্লেইটন সেখান থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে গোল করে যান। ৩-২ ফলাফলে চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল।