নিবেদিতা ঘোষ: দু' চোখে স্বপ্ন। দারিদ্রকে জয় করে একদিন বিশাল ফুটবলার হবেন। এই স্বপ্ন নিয়েই এক দিন হাওড়া-বর্ধমান কড লাইনের ট্রেনে চেপে বসেছিলেন রাজু ঘোষ।
তার আগে রাজু জেলা বিভাগে ফুটবল খেলেছেন। মাথাটা খুব ভাল। হেডে যথেষ্ট মুন্সিয়ানা। তাঁর দল বিপদে পড়লে, মাথা কথা বলে। উইং দিয়ে বল ভেসে এসে মাথায় পড়লে, আর দেখতে হবে না। বল অবধারিত জালে। এক কথায় দুর্দান্ত হেডার রাজু। সচরাচর এই রকম হেডার দেখা যায় না।
ফুটবলার হওয়ার যে স্বপ্ন নিয়ে রাজু একদিন কলকাতায় এসেছিলেন, সেই স্বপ্ন বোধ হয় এবার পূরণ হতে চলেছে। ২০০১ সালে তিনি এরিয়ান ক্লাবে খেলার সুযোগ পেয়ে গেলেন। প্রয়াত কোচ সুদীপ চ্যাটার্জির তত্ত্বাবধানে।
যখনই দল বিপদে পড়তো তখনই সুপার সাব হয়ে মাঠে নেমে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশা জাগাতেন রাজু। তাঁর এই পারফরমেন্সের জন্য ২০০৩ সালে অনূর্ধ্ব-২১ বাংলা দলে সুযোগও পেয়ে যান রাজু। সেই সময় বাংলার কোচ ছিলেন আলোক মুখার্জি। ২০০৭ সালে ভাল প্রস্তাব দিয়ে তাঁকে দলে নেয় জর্জ টেলিগ্রাফ।
কিন্তু ওই মরশুম টুকুই। তারপর সংসার চলবে কী করে? তাই মরশুম শেষে তাঁর খেপই ছিল একমাত্র অর্থ রোজগারের জায়গা। ২০০৯ সালে গরলগাছা খেলেছিলেন রাজু। কোচ কৃষ্ণ নন্দীর কোচিংয়ে। সেই সময় ১৫০-২০০ লোক গরলগাছার খেলা দেখতে কলকাতা ময়দানে আসত। রাজু তখন সবার কাছে খুব প্রিয়। ২০১৯ সালে শেষ কলকাতা ময়দান খেলেন তিনি। তবে চোট-আঘাতের জন্য তাঁর যে উচ্চতায় যাওয়ার কথা ছিল, তা আর হয়ে ওঠেনি। এখন তিনি গরলগাছার অনুশীলনে থাকলেও, সেই রকম রোজগার নেই। চাকরির বড়ই প্রয়োজন তাঁর।