দেবাশিস ভট্টাচার্য: দরিদ্র কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত হলে যা হয়, তাই হয়েছে সোমনাথ চক্রবর্তী ও দুলাল পাত্রের। ওদের অসম্ভব প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও, ওরা বড় টিম খেলার ঝুঁকি নেয়নি। সরকারি চাকরি নিয়ে নিজেদের জীবন নিশ্চিত করে ফেলেছে।
অথচ ওদের খেপ খেলার জন্য চুঁচুড়া, চন্দননগর, শ্যামনগর থেকে ডাক আসত। আমার বেশ মনে আছে, সোমনাথ একবার একার কাঁধে দায়িত্ব নিয়ে ২১ বছর পর শ্রীরামপুর কলেজকে ফাইনালে তুলেছিল। যদিও ওই ফাইনালে আমরা ১-০ গোলে হেরে গিয়েছিলাম আশুতোষ কলেজের কাছে।
আর দুলাল উঠেছিল শ্রীরামপুর স্পোর্টিং ক্লাব থেকে। ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র দলেও খেলেছিল ও। ও গোলে করে জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন করেছিল লাল-হলুদের জুনিয়র দলকে। সেই পেপার কাটিংও আমার কাছে এখনও আছে। কিন্তু সিনিয়র দলে আর ওর খেলা হয়নি। রেলে চলে গিয়েছিল। চাকরির জন্য।
আমার আরও মনে আছে জেলার মাঠে এক ফুটবল ফাইনালে চিফ গেস্ট হয়ে গিয়েছিলেন শিশির ঘোষ। সেই ফাইনালে খেলছিল দুলাল। দুলালের খেলা দেখে বেশ ভাল লেগেছিল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের এই প্রাক্তন ফুটবলারের। তখন তিনি রিষড়া স্পোর্টিং ক্লাবে খেলার জন্য সুপারিশ করে দুলালকে। দুলাল মহকুমা লিগে রিষড়া হয়ে খেলেছিল।
বড় ক্লাবে খেলার যথেষ্ট সম্ভবনা ছিল দুলালের। কিন্ত ওই যে বললাম, দারিদ্রতার জন্য রেল ছাড়ার ঝুঁকি নিতে পারল না। ওর বন্ধু কিংশুক কিন্তু মোহনবাগান খেলেছিল।
আমাদের শ্রীরামপুর এলাকায় এখনও কোনও অনুষ্ঠান হলে ওরা দুজনেই সংবর্ধনা পায়। কিন্তু বড় ক্লাব খেলা থাকলে আজ ওদের সংবর্ধনার গণ্ডিটা আরও বাড়ত। যেভাবে বাড়ত ওদের পরিচিতিটাও।