আনোয়ার আলি থাকছেন মোহনবাগানেই! বাজাজের খেলা শেষ, ইস্টবেঙ্গল, মুম্বই নিয়ে খেলে ধরা পড়লেন

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ রঞ্জিত বাজাজের সব খেলায় জল পড়ে গেল। মোহনবাগানের সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, মোহনবাগানে থাকছেন আনোয়ার আলি। ফিফার নিয়ম বলবৎ করছেনা ফেডারেশন। সেকারনেই মাঠের বাইরের সব খেলা বন্ধ।
কী ছিল খেলাতে? আসলে হঠাৎই সামনে আসে ফিফার নতুন এক নিয়ম। কী আছে ফিফার নতুন নিয়মে, যাতে একজন জাতীয় দলের ফুটবলারকে পেতে দুই প্রধানের নামই বাতাসে ভেসে উঠেছিল।
ফিফার নতুন নিয়ম লোন চুক্তি একবছরের বেশি কোন ফুটবলারের ক্ষেত্রে স্থায়ী হবেনা। ঠিক যে কারণে ভারতীয় ফুটবলে একটা নতুন মাত্রা এনে দিল যা অতীতকে স্মরণ করার মত। হঠাৎ করে দিল্লি এফসির কর্ণধার রঞ্জিত বাজাজ আনোয়ার আলির সঙ্গে মোহনবাগানের চুক্তি বাতিল করার কথা ঘোষণা করেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ফিফার নতুন নিয়মকে উল্লেখ করে জানান, মোহনবাগানকে ছাড়তে হবে আনোয়ার আলিকে। যদিও টুইস্ট আছে বাজাজের টুইটের পর, মোহনবাগানকে নিয়ে খেলার পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গলকেও অফার করে তিনি, এবং বলেন "আনোয়ার ফ্রি প্লেয়ার আপনারা নিতে পারেন।"
অর্থাৎ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখার আগে থেকেই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে মৌখিক কথা চালাতে থাকেন বাজাজ। মঙ্গলবার রাতে রঞ্জিত বাজাজ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে টুইট করে বলেছেন, "মোহনবাগানের সঙ্গে আনোয়ার আলির লোন চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। নতুন ফিফা আরএসটিপি সংবিধানে যা ১ বছরের বেশি সময়ের কোনো লোনকে অবৈধ বলে মনে করে। তিনি দিল্লি এফসিতে পুনরায় যোগ দেবেন অথবা স্থায়ী পরিবর্তনের জন্য আইএসএলে ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন। ভারতীয় ফুটবলের দুটি বড় ক্লাব এই লড়াইয়ে রয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টা গুরুত্বপূর্ণ হবে। এর বেশি কিছু বলা যাবে না।"
এখানেই শেষ নয়, বাজাজের টুইট দ্বিতীয় যে ক্লাবের উল্লেখ করেছিল, সেটা মুম্বাই সিটি এফসি। পাঁচ বছরের জন্যে অফার সেখানেও গিয়েছিল। অর্থাৎ মুম্বাইকে এই খেলায় শরিক করেছিলেন বাজাজ বাবু।
এক্সট্রা টাইম বাংলার খবর অনুযায়ী মোহনবাগান আগে থেকেই এই সতর্কতা অবলম্বন করছিল। মোহনবাগানের ফ্যানস ক্লাব গুলো থেকে দাবি করা হচ্ছিল আনোয়ার ইন-ডিসিপ্লিন যাতে তাঁকে নাও রাখা হতে পারে। এবং নানা মহল থেকে ভেসে আসছিল, আনোয়ারকে নিয়ে মোহনবাগান বিশেষ লাভবান হয়নি, কারণ আনোয়ার ভীষণ চোটপ্রবণ। গত মরসুমেই অনেকটা সময় বাইরে থাকতে হয়েছে তাঁকে।
রঞ্জিত বাজাজের টুইট এর আগে মোহনবাগানের কয়েকটি ফ্যান পেজ থেকে যে খবরটির রটে গিয়েছিল, আনোয়ার মোহনবাগান ছেড়ে দিচ্ছে। তারপরে রঞ্জিত বাজাজের টুইট একটা টুইস্ট আনে। যে ফিফা এবছর নিয়ম এনেছে যে লোনে আসা প্লেয়ারদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হবে না এক বছরের বেশি লোন হবে না। ২০২৭ পর্যন্ত চুক্তি আনোয়ারের সঙ্গে মোহনবাগানের সেটা লোন ভিত্তিক।
মোহনবাগানের সূত্র অনুযায়ী, "ফিফার নিয়ম কতটা কী সেটা তাদের অবশ্যই জানতে চেয়েছিল। কিন্তু লোন চুক্তি করা হয়েছিল ফিফার নতুন নিয়ম লাগু হওয়ার আগে। তাহলে আগের চুক্তি কি এখন বাতিল হবে?" সেটা মোহনবাগান জানতে চেয়েছিল মোহনবাগান। মোহনবাগানের দিক থেকে ভাবা হচ্ছিল যে এই অবস্থায় আনোয়ার থাকতে পারে আবার যেতেও পারে। আবার এও শোনা গেছিল এই পরিস্থিতিতে আনোয়ারের গডফাদার রঞ্জিত বাজাজ আরও বেশি দাম তোলার জন্য আসরে নেমে পড়েছেন আসলে, মোহনবাগান কর্তৃপক্ষ সেটা বুঝতে পেরেছে। সেই হিসাবে মোহনবাগান আনোয়ারের বিষয়টি নিয়ে হ্যাঁ কি না এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছিল। এও শোনা গিয়েছিল, শুধুমাত্র দাম বাড়ানোর খেলায় বাজাজ বাবু মেতে উঠলে, মোহনবাগান শেষ দেখে ছাড়বে। দরকারে পরিস্থিতি বুঝে আদালতে যাবে তাঁরা।
ইস্টবেঙ্গলের দিক থেকে, তারা কোনও দড়ি টানাটানিতে ছিলনা, যা তারা পছন্দ করছে না কিছুদিন ধরে। তার কারণ তাদের ইনভেস্টের যা বলবে সেটাই হবে, এমনই অবস্থানে ছিল তারা। তথাপি দুদিন ধরে নাকি শোনা গিয়েছে যে রঞ্জিত বাজাজ নতুন এক বিষয় সহ আনোয়ারের বিষয়ে কথা বলার জন্য ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাতে সূত্র মারফত যতটুকু জানা যায় যে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব আনোয়ারের অল ইন্ডিয়া রেজিস্ট্রেশনে সেই ক্লাবের সেল করার অধিকার কিংবা তাঁর নামে রেজিস্ট্রেশন দেখতে পায়নি, অতএব ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এখনই এই বিষয়ে ভাবতে চায়নি।
যদি আনোয়ারকে পাওয়ার রাস্তা আইনি জটিলতা ইত্যাদিতে ভরা না থাকতো,তাহলে আনোয়ারকে ইস্টবেঙ্গল ভেবে দেখতে পারতো, অবশ্যই সেক্ষেত্রে আর্থিক সামঞ্জস্য দেখে সিদ্ধান্ত নেয়ার ছিল।
আমরা এই বিষয়ে উভয় বড় ক্লাবের প্রতিক্রিয়া নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ফোনে পাওয়া যায়নি কাউকেই। তবে শেষ পর্যন্ত মোহনবাগানের অন্দর মহল থেকে ভেসে আসে খবর, খেলা শেষ বাজাজের, মোহনবাগানে খেলবেন আনোয়ার।