কলকাতা লিগে ম্যাজিক গোলের নায়ক সৈকত সরকার! বেড়ে ওঠা কীভাবে? জানুন

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক: কলকাতা লিগের বিশ্বমানের গোল করে রাতারাতি স্টার হয়ে গিয়েছেন কল্যাণীর সৈকত সরকার। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অন্ধভক্ত সে৷ পুলিশ এসি'র বিরুদ্ধে ঘরের মাঠ কল্যাণীতে হ্যাটট্রিক করে তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি জানান দিয়েছিলেন। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা কল্যাণীর সৈকতের চোখে যা কিছু স্বপ্ন সব ফুটবলকে আঁকড়েই। মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে সেই স্বপ্ন আরও জোরালো হয়েছে বৈকি। শিয়ালদহ থেকে কল্যাণী, সৈকতের সঙ্গে লোকাল ট্রেনে ওর বন্ধুদের সঙ্গে রোজ যাতায়াত করেন। কল্যাণী স্টেশনে নেমে কাঁঠাল তলায় বাড়ি সৈকতের। স্টেশন থেকে ওর বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৬ কিমি। প্রতিদিন এভাবেই যাতায়াত করেন সৈকত।
দীপেন্দু বিশ্বাস, অসীম বিশ্বাসদের পর বিশ্বস্ত কোনও বাঙালি স্ট্রাইকারের খোঁজ এখনও জারি ময়দানে ৷ যার জন্য বিদেশীহীন এবারের কলকাতা লিগ ৷ সেই পালে যেন খানিক দোলা দিলেন সৈকত ৷ ১৪ বছর বয়সে স্থানীয় কোচ বিমান মণ্ডলের হাতে কল্যাণীর মাঠে প্রকৃত ফুটবল শিক্ষার শুরু সৈকতের। তারপর ধীরে ধীরে ২০১৭ বালি প্রতিভার জার্সিতে কলকাতা ময়দানে আত্মপ্রকাশ। এরপর খিদিরপুর, রেনবো এসি, কাস্টমস হয়ে চলতি মরশুমে এরিয়ানে সই করেছেন সৈকত । তবে ময়দানের চৌহদ্দি পেরিয়ে সৈকত ইতিমধ্যেই রিয়াল কাশ্মীরের হয়ে আই লিগে অংশ নিয়েছেন। এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রস্তাব না-থাকলেও বিস্ময় গোলের পর সম্ভাবনা যে বাড়ল, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন: বড় চমক ইস্টবেঙ্গলের! ভবিষ্যতের দল গড়তে ভারতের দুই তরুণ প্রতিভাকে সই করালো ইস্টবেঙ্গল
বাড়িতে মা, বাবা, দাদা কে নিয়ে সংসার সৈকতের। সৈকতের বাবা পেশায় একজন মালি। দাদা ফটো এডিটিং এর কাজ করেন সেই থেকেই সংসার চলে সৈকতদের। তবে বিশ্বমানের সেই গোলের ব্যাপারে সৈকতকে জিজ্ঞেস করলে হাঁসি মুখে উত্তর দেন, "নিজেকে কখনই স্টার মনে হচ্ছে না। এরকম গোল আগেও অনেক করেছি। খেপের মাঠে এর থেকেও আরও ভালো গোল করেছি। কিন্তু এতবড় পর্যায়ে কোনদিন করিনি। ভবিষ্যতে আইএসএল, আইলীগে বড় দলের হয়ে খেলতে চাই।"
রাতারাতি বিশ্বমানের গোল করে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন সৈকত। তাই সৈকতের মা বাবা কিছুটা অবাক। ছেলের বিশ্বমানের গোল নিয়ে বলতে গিয়ে আবেগে বসলেন সৈকতের মা শেফালী দেবী, "মোবাইলে সেভাবে খেলা দেখতে পারিনা। তবে ওঁর গোলটা দেখেছি। কখনও ভাবিনি ওঁর গোলটা এত বড় জায়গায় যাবে। ছেলের পাশে সবসময় ছিলাম ও যা করতে চেয়েছে সব করতে দিয়েছি। ওঁর স্বপ্ন খেলা তাই ও যা চাইবে ভবিষ্যতে তাই করুক।"
চাকরি পাননি, আপাতত ফুটবল খেলেই জীবন চলছে। কলকাতা লিগের পরে ফের আই লিগের কোনও ক্লাবে খেলতে চান। সবমিলিয়ে ফুটবলকে আঁকড়েই সামনে তাকাতে চান। একটা গোল করে সাময়িক প্রশংসা নয়, ধারাবাহিক ভালো খেলে এগিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য সৈকতের।