ইস্টবেঙ্গল এফসি - ১ (সল ক্রেস্পো)
মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট - ৩ (জেসন কামিংস, লিস্টন কোলাসো, দিমিত্রি পেত্রাতোস - পেনাল্টি)
এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : সরকারিভাবে দর্শকসংখ্যা ঘোষণা করা হয়েছিল ৫৯ হাজার, কিন্তু যুবভারতীর গ্যালারি দেখে তা যেন বড্ড বাড়াবাড়িই লাগছিল। তবে দর্শকদের ভিড়ে মোহনবাগান যেমন হারাল ইস্টবেঙ্গলকে, মাঠের লড়াইয়েও মোহনবাগান হারাল ইস্টবেঙ্গলকে।
দুই মিনিটেই বড়সড় সুযোগ তৈরি করে ফেলেছিল মোহনবাগান। বক্সের ডানদিক থেকে ফ্রিকিকে বল রাখেন দিমিত্রি পেত্রাতোস, সেটি ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডাররা ঠিকমত ক্লিয়ার করতে না পেরে বল যায় হেক্টর ইয়ুস্তের মাথায়, কিন্তু মোহন ডিফেন্ডারের হেডার পোস্টে লাগে। তবে প্রতি আক্রমণে ইস্টবেঙ্গল বিপদ তৈরি করছিল, যার ফল মেলে ১৩ মিনিটে।
আরও পড়ুন - কলকাতা ডার্বি নিয়ে স্মৃতিচারণা স্বয়ং ফিফা প্রেসিডেন্টের
নন্ধকুমারের ভাসানো বল বক্সের মধ্যে নিতে চান ক্লেইটন সিলভা, কিন্তু সেখানে তাকে ধাক্কা মারেন বিশাল কাইথ, যার ফলে পেনাল্টি দেন রেফারি তেজস নাগভেঙ্কর। তবে ক্লেইটনের পেনাল্টি ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বাঁচান বিশাল। তারপর থেকে আক্রমণ ও বল পজেশনের দখল নেয় মোহনবাগান। যার সুফল মেলে ২৭ মিনিটে। দূর থেকে দিমিত্রির শট বুঝতে না পেরে শেষ মুহুর্তে সেভ করেন প্রভসুখন গিল, কিন্তু সেই বল পেয়ে গোল করেন জেসন কামিংস।
এরপর যথারীতি মোহনবাগানই দাপটে ফুটবল খেলতে থাকে। ইস্টবেঙ্গল যেন নিজেদের বক্সেই আটকে ছিল। ৩৭ মিনিটে লিড আরও বাড়িয়ে নেয় মোহনবাগান। দিমিত্রির দুরপাল্লার শট প্রথমে পোস্টে লাগে, সেখান থেকে আবারও ফিরতি বল পেয়ে বক্সে বাড়িয়ে দেন দিমিত্রি, যা লাল-হলুদ ডিফেন্স ভেদ করে আসে লিস্টন কোলাসোর পায়ে, আর একেবারে ফাঁকা গোলে গোল করেন তিনি।
যখন ধীরে ধীরে সকলের মনে ৫ গোলের চিত্র ফুটে উঠছিল, সেই সময়েই আবারও গোল পেয়ে যায় মোহনবাগান। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে বক্সের মধ্যে লিস্টনকে ফেলে দেন নন্ধকুমার, যার থেকে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। আর তারপরই গ্যালারি ফাঁকা করতে শুরু করেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।
আরও পড়ুন - শক্তিশালী মোহনবাগানকে রুখতে কোন ছকে নামবে কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল?
তবে দ্বিতীয়ার্ধে সায়ন ব্যানার্জি ও পিভি বিষ্ণু নামার পর ঘুরে দাঁড়ায় ইস্টবেঙ্গল। শুরুর দিকে কামিংসের দুরপাল্লার শট অসাধারণ দক্ষতায় বাঁচান প্রভসুখন গিল। আর তারপরই গোল করে ইস্টবেঙ্গল। ৫৩ মিনিটে ডানদিক থেকে ক্লেইটন সিলভার ভাসানো বল বুকে ধরে দুরন্ত শট মারেন সল ক্রেস্পো। এরপর দুই উইং থেকে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে লাল-হলুদ ফুটবলাররা। এগিয়ে থাকা মোহনবাগান কেমন যেন গুটিয়ে যায় দ্বিতীয়ার্ধে। ৬৩ মিনিটে নন্ধকুমারের ভাসানো বল পেয়ে হেড করেন ক্লেইটন, কিন্তু অসাধারণ দক্ষতায় বাঁচিয়ে দেন বিশাল।
এরপর আশিস রাই ও অনিরুধ থাপাকে নামিয়ে রক্ষণাত্মক ছকে চলে যান হাবাস। সেই সুযোগে বারবার ইস্টবেঙ্গল আক্রমণ হানছিল। কিন্তু ফাইনাল থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলছিলেন নাওরেম-নন্ধরা। একেবারে শেষে অর্থাৎ দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে বক্সের মধ্যে অভিষেক সূর্যবংশী ফাউল করেন পিভি বিষ্ণুকে, কিন্তু সেটি এড়িয়ে যান রেফারি। শেষ অবধি জয় পেল মোহনবাগানই।