এক্সট্রা টাইম নিউজ ডেস্ক : আচ্ছা ২০২০ সাল কি মৃত্যুর সমার্থক! ২০২০ সাল শেষ হয় না কেন—এই প্রশ্ন এখন অনেকের! করোনা মহামারি ছাড়াও খ্যাতনামা মানুষদের মৃত্যুমিছিল যেন বেড়েই চলেছে। গত ২৫ নভেম্বর চলে গিয়েছিলেন দিয়েগো মারাদোনা। এবার তাঁকে অনুসরণ করে অমৃতলোকে চলে গেলেন ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক। তিনি এক ও অদ্বিতীয় পাওলো রসি।
৬৪ বছর বয়সে না–ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন পাওলো রসি। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম। ইতালির সংবাদমাধ্যম আরএআই স্পোর্টে ফুটবল বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করতেন রসি। তারাই মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সংবাদমাধ্যমটির উপস্থাপক এনরিকো ভারালে ট্যুইটে লিখেছেন, "খুব দুঃখের দিন। পাওলো রসি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। পাবলিতো আমাদের জন্য অবিস্মরণীয়, ’৮২ বিশ্বকাপে সে আমাদের ভালোবাসার বন্ধনে বেঁধেছিল। শান্তিতে ঘুমাও পাওলো।"
জুভেন্টাস ও এসি মিলানে খেলা রসি সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকারদের মধ্যে একজন। ১৯৮২ বিশ্বকাপে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সৌজন্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি। জুয়ায় জড়িয়ে থাকার জন্য তাঁকে নির্বাসিত করেছিল ইতালি ফুটবল সংস্থা। সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন তিনি। সেবার ফাইনালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল ইতালি। প্রথম গোলটি ছিল রসির।
তবে ‘পাবলিতো’ নামে খ্যাত রসি অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন দ্বিতীয় গ্রুপ পর্বে (কোয়ার্টার ফাইনাল) ব্রাজিলের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকের জন্য। টেলে সান্তানার সেই ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিততে না পারা সেরা দলগুলোর একটি। সক্রেটিস, জিকো, জুনিনহো, ফ্যালকাও, এডের, সের্জিনহো'দের মত ‘বল প্লেয়ার’দের নিয়ে গড়া সেই ব্রাজিলকে ৩-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল ইতালি। হ্যাটট্রিক করে ব্রাজিলের ডিফেন্সকে তছনছ করে দেন রসি।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি সেরা পারফরম্যান্সগুলোর মধ্যে এটা একটি। ইতালিকে সে বছর বিশ্বকাপ জেতানোর পাশাপাশি সেরা ফুটবলার, সর্বোচ্চ গোলদাতাও হন রসি। জিতেছিলেন ব্যালন ডি’অরও। দেশের হয়ে ৪৮ ম্যাচে ২০ গোল করেছেন রসি। বুট তুলে রাখার পর কাজ করেছেন ফুটবল পণ্ডিত হিসেবে। তিন সন্তানকে রেখে সেই রসি চলে গেলেন অমৃতলোকে।
ক্লাব ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় জন্মভূমি ইতালিতেই কাটিয়েছেন রসি। জুভেন্টাসকে দুবার সিরি’আ জেতানোর পাশাপাশি ১৯৮৪ সালে জিতিয়েছেন ইউরোপিয়ান কাপ (চ্যাম্পিয়নস লিগ)।
তাঁর মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়াতে শ্রদ্ধার ঢল নেমেছে। জার্মানির প্রাক্তন ফুটবলার ইয়ুর্গেন ক্লিন্সম্যানের ট্যুইট, "প্রিয়, পাবলিতো আমরা সব সময় তোমাকে মনে রাখব।" রসির স্ত্রী ক্যাপেলিত্তি ফেদেরিকার ট্যুইট, "পার সেম্প্রে’—অর্থাৎ ‘চিরকাল।"