এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক: কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন গোটা ঘটনাটি? আসল সমস্যা কোথায়? এখনও কিন্তু কাটল না আই লিগ সম্প্রচারের জট! কয়েকদিন আগের খবর ছিল, সোনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক এবং শ্রাচী অ্যাপে (SSEN) সম্প্রচারিত হবে ২০২৪-২৫ মরশুমের আই লিগের ম্যাচগুলি। আগেই আই লিগের ক্লাব কর্তাদের তরফে সম্মিলিত ভাবে বলা হয়েছিল– সোনিতে খেলা সম্প্রচার না করা হলে তাঁরা প্রতিযোগিতায় খেলবেন না।
এরকম পরিস্থিতিতে গত সোমবার AIFF-এর সভাপতি কল্যাণ চৌবের সঙ্গে কথা বলেন লিগের ১২টি ক্লাবের কর্তারা। এরপরেই সমস্যার সমাধান হয় বলে খবর সামনে আসে। কিন্তু সমস্যাটা কীভাবে শুরু হয়, জানতে গেলে একটু পিছনে যেতে হবে আপনাকে। প্রসঙ্গত, প্রথমে প্রোডাকশন স্বত্বের জন্য টেন্ডার ডেকেও রহস্যজনক ভাবে প্রত্যাহার করেছিল ফেডারেশন। এরপর দ্বিতীয়বার যখন ফেডারেশনের তরফে সম্প্রচার স্বত্বের টেন্ডার ডাকা হয় তখন শুধুমাত্র শ্রাচী স্পোর্টস বিড করেছিল। আর একক হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সম্প্রচারের বরাত পায় শ্রাচী। শ্রাচী ম্যাচ সম্প্রচারের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেরা একটি অ্যাপকে সামনে আনে। SSEN নামে সেই অ্যাপের মাধ্যমে এবারের আই লিগ সম্প্রচার করবে শ্রাচী, সেই খবর সামনে আসে। ফেডারেশনের তরফে শ্রাচীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তারা সম্প্রচারের বরাত পেয়েছে। মূলত অনলাইনে খেলা সম্প্রচারের জন্য বিড করেছিল তারা। ফেডারেশনের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল শ্রাচী নিয়ম মাফিক বিড করেছিল। একটি বিষয় সামনে আসে, সোনির আগে টেলিভিশন সম্প্রচারের জন্যে প্রসারভারতী এগিয়ে আসে।প্রসার ভারতীর তরফে কনফার্মেশন মেইলের কপি গুলি দেখলে বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। বেশ কয়েকটি মেইল আসে একে অপরের পক্ষ থেকে, কিন্তু দূরদর্শনকে সরিয়ে রেখে সোনির অনুপ্রবেশ ঘটে এরই মাঝখানে।
এরপরই বিতর্ক শুরু হয়। আই লিগের ক্লাবগুলির বক্তব্য ছিল, সোনিতে খেলা দেখালে তবেই তারা টুর্নামেন্টে অংশ নেবে। তাদের তরফে বলা হয়, ইতিমধ্যেই সোনিতে লিগ সম্প্রচার করা হবে বলে স্পনসরশিপের জন্য কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে রাখা হয়েছিল। এখন যদি তা না হয় তবে কমিটমেন্ট সমস্যায় পড়তে হবে তাদের। এরপর তড়িঘড়ি ক্লাব-জোটের সঙ্গে আলোচনায় বসে ফেডারেশন। সেখানে ঠিক হয়, ক্লাবগুলি সম্প্রচার-বাবদ ১০ লক্ষ টাকা করে অর্থাৎ মোট ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ফেডারেশনকে দেবে। এরপরই খবর প্রকাশিত হয়, আই লিগ যৌথ ভাবে দেখাবে শ্রাচী এবং সোনি! যদিও শোনা যায়, এরপর সম্প্রচার বাবদ টাকাও দাবি করে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
এখন প্রশ্ন হল, শ্রাচী স্পোর্টস গোটা বিষয়টি কি দর্শক হিসাবে দেখবে? দ্বিতীয়বার বিড ওপেন করে শ্রাচী ছাড়া আর কেউ এগিয়ে আসেনি যে লিগ দেখানোর জন্যে, সেখানে ক্লাব জোট এবং ফেডারেশন শ্রাচীকেই কোণঠাসা করতে চাইলে আখেরে কার লাভ হবে? এই লিগ সম্প্রচার-সহ প্রোডাকশন সব খরচও বহন করছে শ্রাচী। লিগ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে একটা নতুন অ্যাপও নিয়ে এসেছে। ফুটবলের এই মন্দার দেশে কেন আর কেউ আগ্রহী থাকবে ফুটবলের জন্যে কিছু করার?