এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে একদিন আনোয়ার মস্ত ক্রিকেটার হবে, পড়বে ভারতীয় সিনিয়র দলের জার্সি। কিন্তু ক্লাস সেভেনের পর বাবার কথায় হঠাৎ তার স্বপ্নভঙ্গ হয়, ছেলেকে ক্রিকেটার না, হতে হবে ফুটবলার। সেই জন্য নিজের বাড়ি থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে মাহিলাপুর একাডেমিতে ভর্তি করে দেন তাঁকে।
নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্র্যাকটিস করত সে। দিনগুলো ছিল তার কাছে প্রবল যন্ত্রণার, মাঝে মধ্যেই ভাবত অ্যাকাডেমি ছেড়ে চলে যাবে সে। কিন্তু সে পারেনি। ক্রমে খেলার প্রতি তার এক ভালোবাসা জন্মাতে থাকে। অল্প কিছুদিন খেলেই ডাক পায় পাঞ্জাব দলে। আনোয়ার তখন খেলত স্ট্রাইকার পজিশনে। জাতীয় স্তরে ভালো খেলার দরুন নির্বাচিত হয় ভারতীয় দলেও। তখন তার স্বপ্ন কিভাবে সুনীল ছেত্রীর মত গোল করে জেতাবে ভারতীয় দলকে। কিন্তু আবারও স্বপ্নভঙ্গ হয় আনোয়ারের।
তখন অনূর্ধ্ব -১৭ দলের কোচ নিকোলাস আ্যডাম। তিনি আনোয়ারকে পরামর্শ দেন ডিফেন্সে খেলার জন্য। সদিচ্ছা না থাকলেও তাকে খেলতে হয় কারণ সামনেই তখন অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ। সেখানে দুর্দান্ত পারফমেন্স করে আনোয়ার। বিশেষজ্ঞরাও মেনে নেন তিনি হতে চলেছেন ভবিষ্যতের তারকা।
সেখান থেকে আনোয়ার সুযোগ পায় মুম্বই সিটি এফসিতে। সেখান থেকে লোনে যায় ইন্ডিয়ান আ্যরোজে। কিন্তু বছর ঘুরতেই তাঁর জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। ডাক্তারি পরীক্ষায় তার হৃদযন্ত্রে জন্মগত ত্রুটি দেখা যায়। ডাক্তাররা জানান, পেশাগত ফুটবল আর খেলতে পারবেন না সে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে ফ্রান্সেও গিয়েছিলেন আনোয়ার। সেখানেও একই কথা শুনতে হয়েছে তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে বাদ পড়েন জাতীয় দল থেকে। মহমেডানে সই করেছিলেন। খেলা তো দূরের কথা, অনুশীলন করার অনুমতিও দেয়নি এআইএফএফ। আনোয়ারকে কোচিং করানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ফেডারেশনের তরফে। রাজি হননি তিনি।
এই দুঃসময় তাঁর পাশে মা বাবা ছাড়াও পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মিনার্ভা পাঞ্জাবের কর্ণধার রঞ্জিত বাজাজ। নিঃশব্দে সেখানে তাঁর উৎসাহে অনুশীলন করে গেছে আনোয়ার। সব বাধা অতিক্রম করে আইএসএলের মত মঞ্চে এফ সি গোয়া এর মত টিমে নেমে প্রথম ম্যাচেই সেরার পুরস্কার। যেন এলাম দেখলাম জয় করলাম।
স্বভাবতই ভীষণ খুশি আনোয়ার। এরপর তার লক্ষ্য ভারতীয় সিনিয়র দলের জার্সি।