এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : মাত্র ১৬ বছর ৩৩৮ দিন বয়সে শনিবার ইউরো ২০২৪-এর প্রথম ম্যাচ খেলে ফেললেন তরুণ ফরোয়ার্ড লামিন ইয়ামাল। আর এর জেরে কনিষ্ঠতম ফুটবলার হিসেবে ইউরো খেলার ইতিহাস তৈরি করলেন স্প্যানিশ এই তরুণ তুর্কি। ক্রোয়েশিয়ার মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দুরন্ত ফুটবল খেলেছেন লামিন, কিন্তু এ যেন অভ্যাসে পরিণত করেছেন। গত মরশুমে বার্সেলোনার হয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন ইয়ামাল, বিশ্ব ফুটবলে তিনি এসেছেন জিততে।
কিন্তু কে এই লামিন ইয়ামাল, কী তার পরিচয়? আসলে, এক উদ্বাস্তু পরিবারে এবং মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে জন্মেছেন লামিন। ১৩ জুলাই, ২০০৭ সালে মাটারো প্রদেশের রোকাফোন্ডায় জন্মগ্রহণ করেন লামিন, যা বার্সেলোনা থেকে ৪০ মিনিট দূরে ছিল। বাবা মরক্কোর, মা ইকুয়েটোরিয়াল গিনির বাসিন্দা। বার্সেলোনা প্রদেশের ভিতই তৈরি উদ্বাস্তুদের নিয়ে, আর সেই ভিতের বিভিন্ন এলাকায় বেড়ে উঠেছেন লামিন। সময়ে সময়ে পাল্টাতে হয়েছে বসতি, তবুও ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে রেখেছিল লামিন।
আরও পড়ুন - যুব লিগে দুরন্ত পারফর্মেন্সের পুরষ্কার, জাপানের দলে অনুশীলনের সুযোগ পেলেন এই তরুণ বাঙালি
এরপর আঞ্চলিক সেভেন-এ সাইড ফুটবল খেলে ধীরে ধীরে নজর কাড়তে শুরু করে ছোট্ট লামিন। আর তারপর ২০১৪ সালে বার্সেলোনার মূল শহরে লামিন ও তার পরিবার এলে লা মাসিয়ায় ভর্তি হন। সেই লা মাসিয়া, যা থেকে বেড়ে উঠেছিলেন লিওনেল মেসি। সেখানেও নজর কাড়তে শুরু করেন লামিন।
এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি লামিনকে। বার্সেলোনার হয়ে যুবস্তরের প্রতিযোগিতায় নিয়মিত খেলছিলেন তিনি। এমন সময়ে, মরক্কোর ফুটবল ফেডারেশন লামিনকে তাদের দেশের হয়ে খেলতে আবেদন করে। কিন্তু স্পেনে জন্মানো ও বেড়ে ওঠা লামিন সিদ্ধান্ত নেয়, লা-রোজার হয়েই খেলার।
আরও পড়ুন - আপুইয়া কী ইস্টবেঙ্গলে আসছেন? সম্ভাবনা কতটা?
শেষ অবধি চলে আসা যাক ২০২৩ সালের ২৯ এপ্রিল তারিখে, যা লামিনের জীবনের সব থেকে বড় দিন। এই তারিখেই বার্সেলোনার সিনিয়র দলের হয়ে অভিষেক করেছিলেন ১৫ বছরের এক তরুণ ফুটবলার। তার কয়েক মাস পর ৮ সেপ্টেম্বর স্পেনের জাতীয় দলে ডাক পেলেন, আর খেলার সুযোগও পেলেন।
এত সাফল্য, এত স্পটলাইটের মাঝেও নিজের অতীতকে ভোলেননি লামিন। বার্সেলোনার হয়ে প্রথম গোল করে হাতের আঙুলের মাধ্যমে একটি সংখ্যা দেখিয়েছিলেন লামিন, যা বোঝাচ্ছিল '৩০৪', যা তার জন্মস্থান রোকাফোন্ডার পোস্টকোড। গোল করলে প্রায়শই এই সেলিব্রেশন করে থাকেন লামিন।
বর্তমান সময়ের ফুটবলের অন্যতম সেরা প্রতিভা হিসেবে এসেছেন লামিন। সম্প্রতি বার্সেলোনার সাথে ২০২৬ সাল অবধি চুক্তি বাড়িয়েছেন তিনি, যদিও ১৮ বছর না হওয়ায় পেশাদার চুক্তিতে সই করতে পারেননি তিনি। আজও তিনি স্কুলে যান, পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। কিন্তু ফুটবলটাই তার নেশা। আর এই ফুটবলই লামিনের ভালোবাসা।