এখন কেমন আছেন তামিম ইকবাল? ভক্তদের উদ্দেশ্যে বড় বার্তা প্রাক্তন বাংলাদেশ অধিনায়কের

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ ক্রিকেট ভক্তদের জন্য সুখবর। প্রাক্তন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল হার্ট অ্যাটাকের পর জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন এবং পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বড় বার্তাও দেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী তামিম সোমবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) ৫০ ওভারের ম্যাচে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ম্যাচ চলাকালীন তীব্র বুকের ব্যথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার মোহামেডানের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম জানান, "তামিম এখন অনেকটাই ভালো। তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং হাসপাতালে সামান্য হাঁটাহাঁটিও করেছেন।"
মোহামেডানের ফিজিও এনামুল হক জানান, তামিমের অবস্থা এখন স্থিতিশীল এবং তাকে শীঘ্রই অন্য একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হতে পারে। তিনি আরও বলেন, "তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল জীবন বাঁচানোর জন্য, এবং সৌভাগ্যক্রমে আমরা তা করতে পেরেছি।"
হাসপাতালের চিকিৎসা পরিচালক রাজীব হাসান জানান, তামিমকে সংকটময় অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল এবং তাকে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে স্টেন্ট প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
তামিমের শারীরিক অবস্থা নিয়ে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে উদ্বেগ ও প্রার্থনার ঝড় উঠেছে। দীর্ঘদিনের সতীর্থ সাকিব আল হাসান সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “আমার ভাই তামিমের দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করুন এবং কামনা করুন তিনি শিগগিরই মাঠে ফিরবেন।” তামিমের হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ঘটে সাকিবের ৩৮তম জন্মদিনেই। তবে এই সংবাদে জন্মদিন উদযাপন করতে পারেননি এই অলরাউন্ডার।
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার যুবরাজ সিংও তামিমের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, “তুমি কঠিন প্রতিপক্ষদের মুখোমুখি হয়েছো এবং বিজয়ী হয়ে ফিরেছো, এবারও ভিন্ন কিছু হবে না। দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠো। শক্ত থাকো।”
২০০৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের হয়ে ৩৯১টি ম্যাচে অংশ নিয়েছেন তামিম ইকবাল। তিন ফরম্যাটেই সেঞ্চুরির কৃতিত্ব রয়েছে তার ঝুলিতে। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে ১৫,০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।
নিজের পেজে তামিম লিখেছেন, "দুই বছর আগে এই রোজার সময়েই অনুপের কাছে গিয়েছিলাম। সেদিন জানতে পারলাম, অনুপের বাবা ৪ বছরেও হার্টের অপারেশন করতে পারেন নি। হৃদয়ের স্পন্দনই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু এই স্পন্দন যে কোনো ঘোষণা না দিয়েই থেমে যেতে পারে — এই কথাটি আমরা বারবার ভুলে যাই। গতকাল দিনটি শুরু করার সময় কি আমি জানতাম, আমার সাথে কী হতে যাচ্ছে? আল্লাহতা’আলার অশেষ রহমত আর সকলের দোয়ায় আমি ফিরে এসেছি। আমার সৌভাগ্য, এই বিপদের সময়ে আমি পাশে কিছু অসাধারণ মানুষকে পেয়েছিলাম, যাদের বিচক্ষণতা ও আপ্রাণ প্রচেষ্টায় আমি এই সংকট কাটিয়ে ফিরে এসেছি। কিছু ঘটনা আমাদের বাস্তবতা মনে করিয়ে দেয়, জানিয়ে দেয় যে জীবন আসলে কতটা ছোট। আর এই ছোট জীবনে আর কিছু করতে না পারি, সবাই যেন একে অপরের বিপদে পাশে দাঁড়ায়— এটিই আমার অনুরোধ। আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা। সবাই আমার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের ভালোবাসা ছাড়া আমি তামিম ইকবাল কিছুই না।"