এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গত কয়েক বছর বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল দলের সাফল্য ঈর্ষনীয়। সেটা ভারতবাসী হিসাবে আমাদের খারাপ লাগলেও বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলারদের এই কৃতিত্ব অস্বীকার করা যাবেনা। শক্তিশালী ভারতীয় দলকে পরাজিত করেই তারা এই সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু সেখানেই বাংলাদেশের বর্তমান সরকার তথাকথিত স্বাধীনতা নিয়ে এসেছে, কিন্তু আসলেই এই সরকার বাংলাদেশের নারী স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে।
কান্নায় ভেঙে পড়লেন সাবিনারা। গত মরশুমে আমাদের দেশে খেলে গিয়েছেন সঞ্জিদা। ইস্টবেঙ্গল মহিলা দলের হয়ে নজর কেড়েছেন তিনি।
কিন্তু কেউই হয়ত আর ফুটবল খেলতে পারবেন না।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মহিলাদের একটি ফুটবল ম্যাচ বাতিল হয়! কেন জানেন? জয়পুরহাটে একটি সম্প্রীতি মূলক ম্যাচের আয়োজন করা হয় স্থানীয় জেলার মহিলা দলের সঙ্গে রঙপুরের মহিলা দলের। কিন্তু ম্যাচটি বাতিল হয়, শুধু বাতিল নয় খেলার জায়গায় ভাঙচুর করে দুস্কৃতিরা, আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে সেই অঞ্চলে। আয়োজক সৈমুল হাসান এই বিষয় জানান, "আমাদের এলাকার ইসলামপন্থীরা একটি মাঠে জড়ো হয়ে অনুষ্ঠানস্থলের দিকে মিছিল করে। তাদের শত শত মানুষ ছিল। এরপর অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে ওঠে এবং আমাদের খেলাটি বাতিল করতে হয়।"
স্থানীয় ধর্মীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বাক্কার সিদ্দিকি এইবিষয় বলেন, "মেয়েদের ফুটবল ধর্মবিরোধী। আমাদের ধর্মবিশ্বাসের বিরুদ্ধে যায় এমন কিছু বন্ধ করা আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব।"
তবে মহিলাদের ম্যাচ বাতিল কিংবা খেলার মাঠে তান্ডব চালানোর ঘটনা নতুন নয়, এর আগে বাংলাদেশের দিনাজপুরেও একই ঘটনা ঘটে। সেখানেও মহিলাদের সুরক্ষার স্বার্থে আয়োজকদের ম্যাচ বাতিল করতে হয়।
শুধু তাই নয় পরপর দুই বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশ মহিলা দলের ফুটবলাররা তাদের কোচের বিরুদ্ধেও এনেছে বড় অভিযোগ। অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও তার দলের অন্যান্য ফুটবলাররা জানিয়েছেন নেপালের কাঠমান্ডুতে যখন তারা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে গিয়েছিলেন সেখানে তারা হেড কোচ পিটার বাটলার তাদের মানসিক নির্যাতন করেছেন। লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন তাঁরা।
কিন্তু যেখানে ফুটবল খেলে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করলেন বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলাররা, সেখানে তাদেরই দেশে একেরপর এক ম্যাচ বাতিল এবং মানসিক নির্যাতন তাদের প্রতিভার প্রতি অবিচার করা এবং অপমান করা। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের জয়ধ্বজা যখন ওড়াচ্ছেন তখন সাবিনা, সঞ্জিদাদের থেকে ফুটবলটাই কেড়ে নিচ্ছে তাদেরই দেশের মানুষ।
কোনদিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যত? যেখানে সভ্যতা সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে সেখানে বাংলাদেশ যাচ্ছে দ্রুত গতিতে পিছন দিকে। ধিক্কার রইল এই সমাজ ব্যবস্থাকে আর ধিক্কার রইল বাংলাদেশের তথাকথিত স্বাধীনতাকে। ধিক্কার রইল বঙ্গবন্ধুর সৃষ্টি সেই বাংলাদেশকে।