এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক: শুক্রবার একটি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদপত্রে ভারতীয় ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলির ছবি "জোকার" হিসেবে তুলে ধরা হয়, যা মেলবোর্নে স্যাম কনস্টাসের সঙ্গে তাঁর মাঠের বচসার প্রেক্ষিতে করা হয়। এই ঘটনায় প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়ার এমন আচরণকে প্রত্যাশিত বলে জানিয়েছেন।
একটি বিখ্যাত অস্ট্রেলিয়ান সংবাদপত্রে "ক্লাউন কোহলি" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে কোহলির নাকে একটি 'জোকারের নাক' লাগানো ছবি ছিল। স্যাম কনস্টাসের সঙ্গে কোহলির কাঁধের সংস্পর্শ নিয়ে লেখা হয়, "কিশোরের স্বপ্নের টেস্ট অভিষেকে ভারতীয় তারকা কোহলির অবাঞ্ছিত আচরণ।"
এই প্রসঙ্গে স্টার স্পোর্টসকে রবি শাস্ত্রী বলেন, "আপনি আয়োজক দেশে এমন কিছু প্রত্যাশা করতেই পারেন। আমি আশা করি, আমাদের দেশও এমন পরিস্থিতিতে আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য আরও জোরালোভাবে দাঁড়াবে। আমি এতে অবাক হইনি, কারণ অস্ট্রেলিয়া গত ১৪-১৫ বছর ধরে এখানে জিততে পারেনি। মেলবোর্নে তাদের শেষ টেস্ট জয় ছিল ২০১১ সালে। তাই, সুযোগ পেলে তারা এমন কাজ করবে।"
রবি শাস্ত্রী আরও বলেন, "এটি অনেকটা হতাশার বহিঃপ্রকাশ। সিরিজে তিনটি ম্যাচ হয়ে গিয়েছে, স্কোরলাইন ১-১, কিন্তু এখনো তারা বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি জেতেনি। তাদের মেলবোর্নে জিততেই হবে। এসব কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। আমি অনেকবার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছি। সেখানে পুরো দেশ দলকে সমর্থন করে—কেবল দর্শকরাই নয়, মিডিয়াও। তাই আমি অবাক হইনি। যদি তারা ৩-০ বা ২-০ এগিয়ে থাকত, তাহলে হয়তো শিরোনাম ভিন্ন হতে পারত। এটা দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে উঠেছে এবং তা কোথাও না কোথাও প্রকাশ পেতই। কারও ওপর তাদের রাগ পড়তেই হতো। গতকালের ঘটনার পর তারা সেই সুযোগ পেয়েছে।"
এর পাশাপাশি রবি শাস্ত্রী আরও যোগ করেন, "তারা বলল, ‘এটাই সুযোগ; চল, কলম আর ব্রাশ নিয়ে শুরু করি।’ আপনি দেখলেন, বিরাট কোহলির নাকের সেই ছবি। তাদের মনে ছিল না সিম আঁকা দরকার—তা হলে এটি একটা বল হয়ে যেত।"
বিরাট কোহলির শাস্তি নিয়ে যারা আরও কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে রবি শাস্ত্রী বলেন, "আমি আগেই বলেছি, ম্যাচ রেফারি তার কাজ করেছেন; শাস্তি হিসেবে ম্যাচ ফি-এর ২০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। এখানে একটি উদাহরণ রয়েছে। স্টিভ স্মিথ এবং কাগিসো রাবাডার মধ্যে একটি সংঘর্ষ হয়েছিল, যা আরও শারীরিক ছিল। রাবাডার শাস্তি প্রথমে লেভেল ৩ ছিল, পরে আপিলের মাধ্যমে তা লেভেল ১-এ নামিয়ে আনা হয় এবং ২০ শতাংশ জরিমানা করা হয়।"
"তাহলে একটি মানদণ্ড তৈরি হয়েছে। আম্পায়ারদের কাছে খেলোয়াড়দের বিগত কয়েক বছরের রেকর্ড থাকে, যেখানে তারা কতবার আইন ভেঙেছে, তার তথ্য থাকে। সেই ভিত্তিতে ভোটিং হয়, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে এটি আইসিসি-র টেকনিক্যাল কমিটির কাছে যায়, যারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। তারা পুরো প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে। কোথাও না কোথাও একটি মানদণ্ড স্থাপন করা হয়েছে। রাবাডা এবং স্টিভ স্মিথের ঘটনার ভিত্তিতে শাস্তি লেভেল ১-এ নামিয়ে আনা হয়েছে এবং জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। ম্যাচ রেফারির কাছে বিষয়টি হস্তান্তর করা হয়েছে, এবং এ বিষয়ে আর কিছুই করার নেই," শাস্ত্রী যোগ করেন।