এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ: শনিবার, মহারাষ্ট্রের থানের আকৃতি হাসপাতালে ভর্তি হন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার বিনোদ কাম্বলি। শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সোমবার তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানানো হলেও, কাম্বলি এখনও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ দলের সদস্য কাম্বলি গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি আর্থিক সংকটেও ভুগছেন। সম্প্রতি তাঁর শারীরিক দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে শৈশবের কোচ রমাকান্ত আচরেকরের স্মরণসভায়। ওই অনুষ্ঠানে তাঁর শৈশবের বন্ধু এবং প্রাক্তন সতীর্থ শচীন তেন্ডুলকরের সঙ্গে আবেগঘন পুনর্মিলন হয়। বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও, কাম্বলি এখনও ভারতীয় ক্রিকেট মহলে প্রিয় একটি নাম।
একটি খোলামেলা সাক্ষাৎকারে কাম্বলি জানান যে ২০১৩ সালে তিনি দুটি হার্ট অ্যাটাকের সম্মুখীন হয়েছিলেন এবং মারাত্মক ইউরিনারি ইনফেকশনের সঙ্গে লড়াই করেছেন। এছাড়া, তিনি শচীন তেন্ডুলকরের কাছ থেকে পাওয়া আর্থিক সহায়তার কথাও শেয়ার করেন, যা নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা ছিল।
'দ্য ভিকি লালওয়ানি শো'-তে কাম্বলি জানান "আমার দুটি হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। আমার স্ত্রী আমাকে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং শচীনই আমাকে সাহায্য করেছিলেন। ২০১৩ সালে আমার দুটি সার্জারির খরচ তিনিই বহন করেছিলেন। একসময় আমি ভেবেছিলাম শচীন আমাকে সাহায্য করেননি, কিন্তু তখন আমি হতাশ ছিলাম। সত্যি কথা হল, শচীন সবসময় আমাকে সাহায্য করেছেন। আমাদের শৈশবের বন্ধন এখনও অটুট।"
নিজের পরিবারকে ধন্যবাদ জানিয়ে কাম্বলি বলেন, "আমার স্ত্রী আন্দ্রিয়া এবং দুই সন্তান, জেসাস ও জোহানা, আমার সবচেয়ে বড় সমর্থক। তাঁরা সবসময় আমার পাশে থেকেছেন এবং আমার যত্ন নিয়েছেন। আমি রিহ্যাবে যেতে প্রস্তুত। আমি আমার পরিবারের জন্য সুস্থ হতে চাই।"
বিনোদ কাম্বলির পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশের বহু প্রাক্তন ক্রিকেটার, যার মধ্যে রয়েছেন সুনীল গাভাসকর ও কপিল দেবের মতো কিংবদন্তি।
গাভাসকর জানান, ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী দল কাম্বলির পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে এবং তাঁকে সাহায্যের জন্য তাঁদের সম্মিলিত ইচ্ছার কথা জানিয়েছে।
"১৯৮৩ সালের দল সবসময়ই তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে সচেতন। আমার কাছে তাঁরা অনেকটা নাতি বা ছেলের মতো। আমরা তাঁদের জন্য খুবই চিন্তিত, বিশেষত যখন ভাগ্য তাঁদের সঙ্গ ছেড়ে দেয়। আমরা কাম্বলির যত্ন নিতে চাই এবং তাঁকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করতে চাই," গাভাসকর বলেন।
কপিল দেব গাভাসকরের কথার সুর মিলিয়ে বলেন, কাম্বলির পুনরুদ্ধারে আত্মসচেতনতার গুরুত্ব।
"আমরা সবাই তাঁকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের চেয়ে বেশি, তাঁকেই নিজেকে সাহায্য করতে হবে। তিনি নিজে চাইলে তবেই আমরা তাঁকে সাহায্য করতে পারব," কপিল মন্তব্য করেন।
১৯৯১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ভারতের হয়ে ১৭টি টেস্ট এবং ১০৪টি ওয়ানডে খেলা বিনোদ কাম্বলি ভারতীয় ক্রিকেটের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ক্রিকেট মহল তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে, এবং সকলের আশা, কাম্বলি তাঁর সমস্ত সমস্যা কাটিয়ে উঠে জীবনে নতুন অধ্যায় শুরু করবেন।