টেস্ট থেকে অবসর বিরাট কোহলির: ‘সহজ নয় — তবে সঠিক মনে হচ্ছে… ২৬৯, সাইনিং অফ’

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ সোমবার ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার বিরাট কোহলি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা করেছেন। ইংল্যান্ড সফরের আগে তাঁর এই সিদ্ধান্তে ভারতীয় ক্রিকেটে এক যুগের সমাপ্তি ঘটল।
নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে কোহলি লেখেন, “টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার ব্যাগি ব্লু পরে মাঠে নামার পর থেকে ১৪ বছর কেটে গিয়েছে। সত্যি বলতে, এই ফরম্যাট আমাকে যে পথে নিয়ে যাবে, তা আমি কল্পনাও করিনি। এটি আমাকে বারবার পরীক্ষা নিয়েছে, গড়েছে, আর এমন কিছু শিক্ষা দিয়েছে যা আমি সারাজীবন বহন করব।”
এই পোস্টের শেষে কোহলি লিখেছেন, “#২৬৯, সাইনিং অফ।” এটি তাঁর টেস্ট ক্যাপ নম্বর।
৩৬ বছর বয়সি কোহলি ১৪ বছরের দীর্ঘ ও বর্ণময় টেস্ট কেরিয়ারের ইতি টানলেন। ২০১১ সালের ২০ জুন কিংস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক করেন তিনি। এরপর ১২৩টি টেস্টে ৯২৩০ রান সংগ্রহ করেন, যার গড় ৪৬.৮৫।
২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে কোহলি ভারতের হয়ে সবচেয়ে সফল ব্যাটার ছিলেন। এই সময়কালে ৭২০২ রান করেন, গড় ছিল ৫৪.৯৭ এবং ২৭টি শতরান করেন, যা ওই দশকে বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক।
তবে ২০২০ সালের পর থেকে কোহলির পারফরম্যান্সে বড়সড় পতন দেখা যায়। কোভিড পরবর্তী সময়ে ৬৮ ইনিংসে মাত্র ২০২৮ রান করেন তিনি, গড় ছিল ৩০.৭২। এ সময় তাঁর শতরান মাত্র তিনটি। ২০২০ সালের পর যারা টেস্টে কমপক্ষে ২০০০ রান করেছেন, তাঁদের মধ্যে কোহলির গড় ছিল সবচেয়ে কম।
View this post on Instagram
তারপরও টেস্ট ক্রিকেটে কোহলি নিঃসন্দেহে ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার হয়ে থাকবেন। ভারতের হয়ে সর্বাধিক রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তিনি চতুর্থ, তাঁর আগে আছেন সচিন তেন্ডুলকর (১৫,৯২১), রাহুল দ্রাবিড় (১৩,২৬৫) এবং সুনীল গাভাস্কার (১০,১২২)।
ক্যাপ্টেন হিসেবেও কোহলি ছিলেন অনন্য। অধিনায়ক হিসেবে ১১৩ ইনিংসে করেছেন ৫৮৬৪ রান, যা টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর ২০টি শতরান রয়েছে — দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথ (২৫) ছাড়া আর কেউ অধিনায়ক হিসেবে এত শতরান করতে পারেননি।
২০২৪ সালের বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি সিরিজে পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শতরান দিয়ে সূচনা করলেও সিরিজের পরের ম্যাচগুলোয় হতাশাজনকভাবে ব্যর্থ হন কোহলি। পুরো সিরিজে মাত্র ১৯৩ রান করেন এবং আট ইনিংসে সাতবারই আউট হন অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে মানসিক চাপ নিয়ে কোহলি বলেন,“যখন বাইরের নেতিবাচকতা নিজের মধ্যে গ্রহণ করতে শুরু করবেন, তখন সেটা একটা বড় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়… তখন ভাবতে শুরু করেন, ‘এই সফরে আর মাত্র ২-৩ দিন বাকি, এখনই কিছু করতে হবে।’ আর এই জায়গা থেকেই তৈরি হয় একরকম মরিয়া হয়ে ওঠা। এটা আমি অস্ট্রেলিয়ায় খুব ভালোভাবে টের পেয়েছি।”